চলে গেলেন সাংবাদিক-কথাসাহিত্যিক দিলারা হাশেম

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক দিলারা হাশেম আর নেই। ১৯ মার্চ বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে তিনি মারা যান (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
এ সময় তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। দিলারা হাশেমের জন্ম ১৯৩৬ সালের ২১ আগস্ট, যশোরে। তিনি ১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তার প্রথম উপন্যাস ‘ঘর মন জানালা’ ১৯৬৬ সালে প্রকাশিত হয়। সুভাষ দত্তের পরিচালনা ও চিত্রনায়িকা কবরীর প্রযোজনায় তা ‘বলাকা মন’ নামে চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়। উপন্যাসটি বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
১৯৮২ সালে তিনি ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগে যোগ দেন। ২০১১ সালে অবসরে যান। তার আগেও বেশ কয়েক বছর ভয়েস অব আমেরিকায় খণ্ডকালীন বেতার সম্প্রচারক হিসেবে কাজ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে বিবিসি লন্ডনেও খণ্ডকালীন বাংলা সংবাদ পাঠ করতেন তিনি। ভয়েজ অব আমেরিকা জানিয়েছে, দিলারা হাশেম তদানীন্তন রেডিও পাকিস্তান করাচি থেকে দীর্ঘ দিন নিয়মিত বাংলা সংবাদ পাঠ করেছেন।
কথাসাহিত্যিক হিসেবে দিলারা হাশেম তার বিরল ও ব্যতিক্রমী প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। তার বিখ্যাত উপন্যাসগুলোর মধ্যে রয়েছে- একদা এবং অনন্ত (১৯৭৫), স্তব্ধতার কানে কানে (১৯৮০), আমলকির মউ (১৯৮০), সেতু, কাকতালীয় (১৯৮১), সদর অন্দর, মিউর‌্যাল, হামেলা, চন্দ্রগ্রহণ, শঙ্খ করাত (১৯৯৫), শেষ বিকেলের আলো, সিংহ ও অজগর, রাহুগ্রাস (২০০৩), শেষ রাতের সংলাপ (২০০৩), মানবীর সুখ দুঃখ (২০০৪) ইত্যাদি।
উপন্যাস, ছোটগল্প, কবিতা, অনুবাদ ও আত্মজৈবনিক মিলিয়ে তার লেখা বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৩০টি।
সাহিত্যক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৬ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হন দিলারা হাশেম। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর পর তিনিই প্রথম বাঙালি সাহিত্যিক যিনি বিদেশে অবস্থানকালে এই পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়াও তিনি দক্ষিণ এশিয়া এবং উত্তর আমেরিকার বেশ কিছু মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
অঞ্জন দাস