মহানায়ক গান নিয়ে গীতিকার মঞ্জুর উল আলম চৌধুরী

গীতিকার মঞ্জুর উল আলম চৌধুরী যিনি শেখ হাসিনা’র মুখের দিকে চেয়ে থাকেন বঙ্গবন্ধু কে খুঁজে পেতে। পেশায় রেলের উর্ধতন কর্মকর্তা, নেশায় আপাদমস্তক শিল্প দ্রষ্টা। স্রোতহীন চর জাগা পদ্মাতেও স্রোতস্বিনী পদ্মাকে তিনি বুঝে নেন, খুঁজে নেন। রেলের সৃষ্টিশীল এই মানুষটিরই, এক জেদ থেকে রেলপথে যেতে যেতে লিখা গান ‘মহানায়ক’। গানের প্রতিটি কথা, প্রতিটি শব্দ অনন্য। সর্ব বিশেষনেও হয়তো বিশেষায়িত করা হয়ে উঠবে না।
মনের গহীন থেকে উঠে আসা গানের পংক্তিমালায় রয়েছে দেশের প্রতি অপার ভালোলাগা, বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রগাঢ় ভালোবাসা। এই গানে খুব অল্প কথায় দেশের বিস্তৃত রূপ উঠে এসেছে। অপার ভালোলাগা ফুটে উঠেছে। ‘শ্যামল কোমল গাঙ্গেয় এই ব-দ্বীপে বয়ে চলা নদী কাদা জল ধুলি মাটিতে’ এইতো আমার দেশ! ভালোলাগার বাংলাদেশ।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের অস্তিত্বের সাথে একটাই নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’
এই বিশাল হৃদয়ের মানুষটির বিস্তৃত প্রকাশ কোনো উপন্যাস নয়, কোনো গল্প নয়, গানের অল্প কথায় ফুটিয়ে তোলা শুধু দূরহ নয়, এক কথায় অসম্ভব।
অথচ আপাত এই অসম্ভবকে কি নিপুন হাতেই না সম্ভব করেছেন গানের গীতিকার মোঃ মঞ্জুর উল আলম চৌধুরী। এ যেন এক পটুয়ার ক্যানভাসে রঙের তুলিতে আঁকা বঙ্গবন্ধুর জীবন্ত এক প্রতিরূপ। ক্ষণজন্মা বঙ্গবন্ধুর জীবনের প্রতিটি অধ্যায়, প্রতিটি মোড় তিনি ছুঁয়ে গেছেন। ফুটিয়ে তুলেছেন তার জীবনচরিত, তার সংগ্রাম।
মোঃ মঞ্জুর উল আলম চৌধুরী তার কলমে লিখছেন-
‘স্বাধীনতা বৃক্ষের অংকুর হয়ে জন্মেছিলে’
কত গভীর একটা কথা! এই কথা বোঝার বোঝ
এক জীবনে সবার হয়তো হয়েও উঠবে না।
আরো লিখছেন,
‘পরাধীন দেশে অজস্র হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু হয়েছিলে
তুমি ইতিহাস জুড়ে সর্বশ্রেষ্ঠ মহানায়ক এই বাংলার
তুমি শোষকের জম শোষিতের দম স্রষ্টা
স্বাধীনতার। বঙ্গবন্ধুর ‘বঙ্গবন্ধু’ হয়ে উঠবার প্রেক্ষাপট, কি অল্প কথায়, কি সুন্দর করেই না তিনি লিখলেন!
‘একাত্তরের ৭ই মার্চে তোমার অমোঘ ধ্বনি
সারা পৃথিবী উঠলো কেঁপে বজ্রকন্ঠ শুনি
ঐ হুংকারে তোমার জ্বলন্ত লাভা ছুঁয়ে দিলো ঐ আকাশ
বীর বাঙ্গালী যুদ্ধে নামে সাবাশ বাঙ্গালী সাবাশ’
এই দৃপ্ত লেখনীই বলে দেয় স্বাধীনতার দীপ্যমান শিখা কে ছিলেন! কার ঘোষণায় বাঙ্গালীর হৃদয়ে আগুন জ্বলে! কার ডাকে বাঙ্গালী যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে!
বাঙ্গালী হিসেবে আমাদের সৌভাগ্য আমরা একজন বঙ্গবন্ধুকে পেয়েছি। আবার বাঙ্গালী হিসেবেই আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা একজন বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি। আবার একদল বাঙ্গালী-ই হল বঙ্গবন্ধুর ঘাতক।
এটা বড় লজ্জার। এটা বড় ক্ষোভের। এই ঘাতক দলের প্রতি মোঃ মঞ্জুর উল আলম চৌধুরীর কলম লিখেছে অনুল্লেখিত অভিসম্পাত-
‘৭৫ এর কালোরাত্রিতে বিশ্বাসঘাতকের দল
কাপুরুষের মতো বইয়ে দিলো রক্তসাগর অতল’
স্বাধীনতা বিরোধী দুষ্টচক্র ভেবেছিল বঙ্গবন্ধু কে হত্যা করলেই বুঝি ‘বঙ্গবন্ধু’ হারিয়ে যাবেন। তারা জানত না ‘বঙ্গবন্ধু’ হলেন চির ভাস্বর। বঙ্গবন্ধু হারাবার নয় বরং বঙ্গবন্ধু হলেন সেই উজ্জ্বল নক্ষত্র যা রয়ে যাবে বহুযুগ।
‘হলে মৃত্যুন্জয়ী অকুতোভয় চির উন্নত তব শির
তুমি এই বাংলার আকাশ জুড়ে চিরজাগ্রত মহাবীর’
লেখা: মো. সাইদুর রহমান অনি