সকালের নরম আলোয় মন হয়ে গেল তেতো। ভয়ংকর রকমের তেতো। অথচ এটা কেবলই ভালো লাগার সময়। উদাসভাবে কিছু নিয়ে ভাবার সময়।
রাতে ঘুম ভালো হয়নি। আরো অন্তত তিন ঘণ্টা ঘুমানোর দরকার ছিল। বড় ভাইয়ার হুমকি ধামকিতে একটা অস্বস্তি তৈরি হয়েছে মনে।
এখন ঘুম নিয়ে টানাটানি।
গতকাল ভাইয়াকে ডেকেছিলাম আমার ছোট্ট অফিসে। উদ্দেশ্য, তার সাহায্য নেয়া। বিয়েতো আর একা একা করা যায় না। ফ্যামিলি লাগবে।
ভিন্ন ধর্মের একটা মেয়েকে বিয়ে করতে যাচ্ছি।
কঠিন লড়াই করতে হবে। সৈনিক দরকার।
আমরা চার ভাই, দুই বোন। বাবা এবং মা।
ব্যস। এই আটজন ফ্যামিলির সক্রিয় সদস্য। আরো দুইজন আছেন সহযোগী সদস্য। দুই বোনের জামাই।
বাবা বড় চাকুরীজীবি ছিলেন। সবসময়ই ধার্মিক জীবন যাপন করেছেন। রিটায়ারমেন্টের পর আমার সবচাইতে ছোট ভাইয়ের হাত ধরে ডাইরেক্ট তাবলীগে যোগ দিলেন। মা, সারাজীবন ধরেই হাউজ ওয়াইফ। আমি ব্যবসায়ী হতে চেয়েছিলাম। বাবা এটা পছন্দ করেননি। তাই একটু দূরে দূরেই থাকি। আলাদা বাসায়। সবার সাথে যোগাযোগ ও তেমন একটা ছিলো না। তাই ভাইয়ার সাহায্যটা জরুরী। চা টা খাইয়ে খুবই শান্ত স্বরে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করলাম। ভাইয়ার প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হলো, উনি ইলেক্ট্রিক শক খেয়েছেন। হুমকির স্বরে বলে উঠলেন,
: তুমি একটা খ্রীষ্টান মেয়ে বিয়ে করবে। আর আমরা এটা হাসি মুখে মেনে নেব ভাবছো! এসব ফাইজলামি বন্ধ করো!
সৈনিক তৈরির প্রথম মিশন ফেইল হবার উপক্রম দেখে আমার প্রায় মাথা নষ্ট। কাকুতি মিনতি করে অনুরোধের স্বরে বললাম,
: ভাইয়া, প্লীজ! আমার দিকটা একটু ভেবে দেখেন! আমি অনেক ভেবেচিন্তে এই সিদ্ধান্ত পাকা করেছি।
এখন আপনার সাহায্য দরকার। আপনি বাকি সবাইকে বোঝাবেন! ভাইয়া খেঁকিয়ে উঠলেন।
: তোমার বিয়ে করা বের করছি আমি! দাঁড়াও! সিদ্ধান্ত পাকা না কাঁচা, সবই বের হবে!
সারাজীবন নিজের মতোই যা খুশি করেছো! কিছুই বলিনি। আর না! যদি তুমি এই বিয়েটা করো, সবাইকে বলে তোমাকে একঘরে করে দেবো! বলে কটমট করে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন।
সৈনিক তৈরির ফার্স্ট প্রজেক্ট ব্যর্থ। এবার আমিও ত্যাড়া গলায় বললাম,
: একঘরে করার হুমকি দিচ্ছেন কিভাবে? সবাই কি আপনাকে লিডার মানে? আর যদি মেনেও নেয়, বিয়েটা ঠেকানো যাবে না। আমি যে কোন অবস্থার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত।
ভাইয়া একজন প্রকৃত লিডারের মতোই আমার দিকে করুনার দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন।
আলোচনা ভেঙে গেল।
ঘুম হয়নি বলে শরীরটাও কেমন যেন ম্যাজম্যাজ করছে। ভাবছি, ভাইয়ার হুমকি মোকাবেলায় কি করা যায়! ছোট বোন মিতার বাসায় যাওয়া যেতে পারে। ওর একটা এক্সট্রা কনভিনসিং পাওয়ার আছে। ফ্যামিলির সবাই ওর কথা শোনে।
ফ্রেস হয়ে একটা রিকশা নিয়ে সোজা মিতার বাসায় চলে গেলাম।
মিতা খুব মনোযোগ দিয়ে আমার সমস্যাটা শুনলো।
আশ্বাস দিয়ে বললো,
: কুসুম ভাইয়া, তুমি বিয়ের কথা ভাবো! আমি এগুলো ম্যানেজ করছি। আব্বা, আম্মার সাথে আমি কথা বলবো। তুমিও দুদিন পর গিয়ে তাদের সাথে দেখা করো!
নিশ্চিন্ত হয়ে গেলাম। জানি, মিতা কখনোই ফলস্ কমিটমেন্ট দেয় না।
ঠিক দুই দিন পরেই গেলাম বাবা, মা’র সাথে কথা বলতে। শীতের বিকেল। বাবা বারান্দায় একটা চেয়ারে বসেছিলেন। শেষ বিকেলের নরম আলোয় রোদ পোহাচ্ছেন। কাছে গিয়ে মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললাম,
: আব্বা, মিতা কি এসেছিলো?
উনি এসব ঢংয়ের ধার ধারলেন না। একটু চড়া সুরেই বললেন,
: তোমার কথা বলো! নিজের কথা অন্যকে দিয়ে বলার বদভ্যাস ছাড়ো! বিয়েটা তো তুমিই করবে, নাকি? গুছিয়ে রাখা সব কথাবার্তা এলোমেলো হয়ে গেল। খুবই রাশভারী মানুষ বলে বাবাকে সাধারণত আমরা এড়িয়ে চলি। কোনরকমে শুধু বললাম,
: জী।
এরিমধ্যে মা এসে পাশে দাঁড়িয়েছেন। চিন্তিত মুখে শুনছেন বাপ বেটার কথাবার্তা।
বাবা গম্ভীর স্বরে বললেন,
: বয়স হচ্ছে। বিয়ে করবে। এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু কোন মুসলিম মেয়ে কি তুমি খুঁজে পেলে না?
আমাদের ও খোঁজাখুঁজির সুযোগ দিলে না।
এখন বুড়ো বয়সে বসে বসে দেখতে হবে যে ছেলের বউ স্কার্ট পরে সারা বাড়িতে ঘুরে বেড়াচ্ছে! পর্দা ফর্দা শেষ! হায় আল্লাহ্, আর কত কি দেখতে হবে!
আমি হতভম্ব! এই ধরনের অ্যাটাকের জন্য তৈরি ছিলাম না। হাঁটু গেড়ে বাবার পাশেই মাটিতে বসে বললাম,
: স্কার্ট…! পর্দা…! এগুলো কি বলছেন! এই মেয়ে তো আর ইওরোপ আমেরিকায় জন্মায়নি। এই দেশেরই মেয়ে। মুসলিম মেয়েদের সাথেই বড় হয়েছে।
আমার বোনদের মতোই সালোয়ার কামিজ পরে।
বাবা, মা’র চেহারা শান্ত হয়ে এলো।
বাবা এবার গলা নামিয়ে বললেন,
: মুসলমান হবে তো? আমি হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লাম। বাবার মুখে হাসি ফুটে উঠল। বললেন,
: আলহামদুলিল্লাহ! আর কোন চিন্তা করোনা! বিয়েতে আমাদের কোন আপত্তি নেই। কিন্তু খরচাপাতির কি হবে! তুমি তো এখনও বেকার।
খরচ কম কোরো! আমরাই দেবো।
আমি প্রেস্টিজ রক্ষার্থে মরিয়া হয়ে বললাম,
: বেকার মানে! আমি ব্যবসা করছি না! ম্যানেজ করে নেব। বাবা আবারো বিষন্ন হয়ে গেলেন।
বুঝে গেছেন, আমাদের মধ্যকার এই ইগো কনফ্লিক্ট কখনোই শেষ হবে না।
ঢাকা কোর্ট এলাকায় একটা স্কুটারে বসে আছি। সাথে সুমি। আর কিছুক্ষণ পরেই ও আমার বউ হয়ে যাবে। আমার এক বন্ধু বাবুল, কোর্টেই চাকরি করে। যে কোন ঝামেলা হ্যান্ডেলে সিদ্ধহস্ত।
ওর কথামতোই সকাল দশটার দিকে সুমিকে নিয়ে চলে এসেছি। উদ্দেশ্য, আইন অনুযায়ী ধর্ম পরিবর্তন ও শাদী মোবারক সম্পন্ন করা।
বাবুল অসাধারণ ক্যারিশমেটিক ছেলে!
আমাদের একটুও কষ্ট করতে দিলো না।
রেজিস্ট্রেশন বই নিয়ে এসে স্কুটারে বসিয়ে বসিয়েই সব কাজ শেষ। কোর্টে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে কোন কাজ করার যে কি কষ্ট, তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন। এক ফাঁকে আবার একজনকে বলে চা নাশতা আনিয়ে খাওয়ালো।
সোজা কথায় ভিআইপি সার্ভিস।
এবার বিদায় নেবার পালা। বাবুল খুবই বিনয়ের সাথে বললো,
: কুসুম, বখশীষ সহ সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে দুই হাজার টাকা!
এখন কি দেবে, না পরে দেবে?
আমি মানিব্যাগটা ওর হাতে দিয়ে বললাম,
: এটা একদম খালি! তুমি আমাকে পাঁচ হাজার টাকা ধার দাও! ওই দুই হাজার কেটে বাকি তিন হাজার এটায় ভরে দাও! দেখার মতো হলো বাবুলের চেহারাটা। বিষ্ময়ে তার চেহারা ঝুলে পড়লো। কন্ঠে খুবই বিরক্তি নিয়ে সুমির দিকে তাকিয়ে বললো,
: দেখলেন ভাবী! কি চিজ বিয়ে করেছেন, বুঝে নেন!
বলে টাকাটা ঠিকই আমার মানিব্যাগে ভরে দিলো।
হাসতে হাসতে বললো,
: এবার একটু স্থির হও! এখন থেকে তুমি আর একা না! গুড লাক! বলে একটু গুঁজো হয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমি কেবল ওর গভীর ভালোবাসা অনুভব করছিলাম।
গোপন বিয়ে।
তাই সুমিকে ওদের বাসায় নামিয়ে দিলাম।
মগবাজার কাজী অফিস। সকাল থেকে চেয়ারে বসে কাজী সাহেবের জন্য অপেক্ষা করছি আমরা চারজন।
সুমি, আমি এবং আমার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ দুই বন্ধু। রুবেল ও শাম্মু।
কোর্টে পড়ানো বিয়ে এবং ধর্ম পরিবর্তনের ব্যাপার টা কেউই মেনে নেয়নি। ওদের কথা হলো, সবকিছু ইসলামী মতে হতে হবে। তাই কাজী অফিসে আসা।
কাজী সাহেব চলে এসেছেন। আমরা উঠে দাঁড়িয়ে সালাম দিলাম। বইয়ে লেখালেখি, সাক্ষী পর্ব এবং সাইন করা শেষ। কলেমা পড়িয়ে সুমিকে উনি মুসলমান বলে ডিক্লেয়ার করলেন। বিয়ের পর দোয়ার পর্বও শেষ হলো। এবার কাজীর ফি দেবার পালা।
বন্ধু দুজন আমাকে কাজী সাহেবের দিকে ইশারা করলো। আমি বললাম,
: এসব ইশারা ফিশারায় কাজ হবে না! আমার কাছে সামান্য কিছু টাকা আছে। বিয়ে করলাম। এদিক সেদিক যেতে টাকা লাগবে না!
শাম্মুর দিকে তাকিয়ে বললাম,
: দোস্ত, তোমার মানিব্যাগে সবসময়ই টাকা থাকে।
ফিসটা দিয়ে দাওনা! শাম্মু কটমট করে তাকালো।
বললো,
: কুসুম, ফাইজলামির একটা সীমা আছে! টাকা ছাড়া বিয়ে করতে আসছো কেন?
আমি নির্বিকার ভাবে বললাম,
: তোমরা আছো কি করতে! আমি কি পাপেট নিয়ে আসছি? কিছু কাজ তো করতে হবে! টাকা দেয়াই এখন তোমার একমাত্র কাজ!
করলার স্বাদের মতো তিতা চেহারা নিয়ে শাম্মু কাজী সাহেবের পাওনা মিটিয়ে দিলো। তারপর আমার দিকে ঘুরে বললো,
: দুদিন পর তো তোমার রিসেপশন। আমি আসতে পারবোনা, এখনই বলে দিলাম।
আমি হেসে বললাম,
: গাধা,ওই খরচ নিয়ে টেনশন করোনা! ওইটা তোমার উপর চাপাবো না।
রুবেল পরিস্থিতি দেখে চিন্তায় পড়ে গেছিলো।
এবার একটু হেসে ভরসা দিলো শাম্মুকে।
বললো,
: ব্যস, আর কি সমস্যা! কুসুম নিশ্চয়ই রিসেপশনের খরচের ব্যাপারটা আগেই ভেবে রেখেছে। তাহলে তুমি আসবে না কেন?
আমি রুবেলের কথায় সম্মতি দিয়ে বললাম,
: অবশ্যই ভেবে রেখেছি! আফটার অল, শশুর বাড়ীর লোকজন ও আসবে। বিরাট খরচাপাতির ব্যাপার! আগে থেকে ভেবে না রাখলে চলবে!
রিসেপশনের সব খরচ তুমি দিবা দোস্ত! তুমি অলরেডি বিশাল ব্যবসার মালিক! বন্ধু বান্ধবের সামান্য বিপদে হেল্প না করতে পারলে বিজনেস করে লাভ কি? বলে রুবেলের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালাম।
রুবেল অবশ্য ঘাবড়ালো না। শুধু আমার পিঠে একটা থাপ্পড় দিয়ে বললো,
: দোস্ত, তুমি আসলেই একটা জিনিস! এতো সাহস পাও কিভাবে! বলে একটু হেসে সুমি কে বললো,
: দেখলেন তো ভাবী! কিভাবে টাকা পয়সা ছাড়াই সব কাজে নাক গলিয়ে দেয়! কিভাবে কিভাবে যেন পারও পেয়ে যায়।
সুমি একটু বিব্রত হাসি দিলো। বললো,
: ও কি আমাকে থোড়াই কেয়ার করে! আমি কি করবো, বলেন! আমি হাসতে হাসতেই বললাম,
: দোস্তরা, ভালো মজবুত খাতায় এগুলো লোন হিসেবে লিখে রেখো! একদিন নিশ্চয়ই শোধ করে দেবো! তবে, দেরি হবে। তাই খাতা মজবুত হওয়া চাই!
কাজী অফিস থেকে বের হয়ে আমরা দুটো রিকশা নিলাম। সুমিকে ওদের বাসায় পৌঁছে দিতে হবে। যথারীতি এই বিয়েটাও গোপন রাখতে হয়েছে সুমির ফ্যামিলির কাছে।
আমি গেলাম মিতার বাসায়। ওখানেই প্রথম নতুন বউ নিয়ে উঠতে হবে। তাছাড়া, ছোট্ট একটা হলুদের অনুষ্ঠান করতে হবে এবং সেটা আজকেই।
সামান্য হলেও ফুল টুল দিয়ে ঘর সাজাবার একটা ব্যাপারও আছে। মাথাটা ঘুরছে। কারন, এসব সাজানো গোছানোর কাজ আমাকে দিয়ে কখনোই হয় না। লেজেগোবরে করে ফেলি।
ভাবতে ভাবতে মিতার বাসায় ঢুকলাম।
বাহ্! ড্রইংরুম অলরেডি সাজানো হয়ে গেছে।
আমি হতবাক! কে করলো এতো সব ঝামেলার কাজ! বেডরুমে ঢুকেই দেখি, ভাইয়া ঘর সাজাতে ব্যস্ত। সেই প্রথম বিদ্রোহী সৈনিক! আমাকে দেখেই খুব ব্যস্ত ভাবে বললেন,
: একটু দেখো তো! ফুলগুলো ঠিক আছে কিনা!
তার চেহারা দেখেই বুঝলাম ওইসব একঘরে ফরের কথা ওনার মন থেকে গায়েব হয়ে গেছে।
আমি হেসে বললাম,
: আমার মতামত নিলেই প্যাঁচ লাগবে। ওই চেষ্টা না করাই ভালো।
: তাইতো! বলেই ভাইয়া আবার কাজে লেগে গেলেন।
মনে মনে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করলাম। আসলে ভাইয়াটা এরকমই। অসম্ভব ভালো একজন মানুষ! আমার মতো রাগ ধরে রাখেন না। একটু বোঝালেই ঠান্ডা। মিতা নিশ্চয়ই কিছু বুঝিয়েছে!
বিয়ের লাস্ট ক্লাস চলছে। সুমি এবং আমি সহ দশ বারোটা কাপল্ এই ক্লাসের স্টুডেন্ট।
অন্ততঃ মিক্সড ম্যারেজ ছাড়া ওদের ফ্যামিলি কিছুতেই রাজি না। অর্থাৎ যার যার ধর্মে থেকেই বিয়ে। আমি সায় দিয়েছি। শর্ত হলো, ওদের রীতি অনুযায়ী বিয়ের আগে একটা চার্চে ফাদারের আন্ডারে কয়েকদিন লেসন নিতে হবে।
খুব ভালো জুটি হিসেবেই আমরা লেসন শেষ করেছি। সত্যি বলতে কি, আমি ক্লাসগুলো বেশ এনজয় করেছি। বিবাহপূর্ব সংযম এবং বিবাহ পরবর্তী জীবন ব্যবস্থা সম্পর্কে খুব ভালোভাবে হবু দম্পতিদেরকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। আমার মনে হয়েছে এটা সবার জন্যই জরুরী।
দুই ফ্যামিলির সদস্যদের উপস্থিতিতে তেজগাঁও চার্চে বিয়েটা হয়ে গেলো। ফাদারের সাথে সাথে আমরা শপথবাক্য পাঠ করলাম। বিয়ের গিট্টু খতম!
সব শেষ করে বউ নিয়ে রওনা দিলাম মিতার বাসার দিকে।
বিঃদ্রঃ আমার বন্ধু বাবুল এখন বারিধারায় নিজের বাড়িতে থাকে। শাম্মু একটা বিশাল রিয়েল এস্টেট কোম্পানীর মালিক। রুবেল নানা জায়গায় বাড়ি টাড়ি বানিয়ে হুলস্থুল কান্ড!
ওইসব ধার নেয়া টাকা ওদেরকে কখনোই শোধ করা হয়নি। করা যায়নি। আমার মনে হয়েছে, ওইগুলো ফেরত দিতে গেলে ওরা ভীষণ মন খারাপ করবে! যদিও আমি দেখা হলেই সেই পুরনো ধারের কথা বলি। ওরা লজ্জা পায়।
টাকা তো চাইলে শোধ করা যাবে!
কিন্তু ওইসব ভালোবাসার ঋণ কি কখনো শোধ করা যাবে……!
আবদুল জাববার খান