“নীল আকাশের নিচে আমি রাস্তা চলেছি একা..” “শুধু একবার বলে যাও, আমি যে তোমার কতো প্রিয়”, এমন অনেক অনেক জনপ্রিয় গানের গায়ক খন্দকার ফারুক আহমদ। মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী প্রকাশ্য জনসভায় “রিকশাওয়ালা বলে কারে তুমি আজ ঘৃ*ণা করো” গানটির গায়ক হিসেবে খন্দকার ফারুক আহমদকে স্বর্ণপদক পরিয়ে দিয়েছিলেন। “কোথায় যেন দেখেছি” ছবির এই গানটি কেবল শ্রমজীবী মানুষের মধ্যেই নয় সব শ্রেণির মানুষের কাছেই প্রিয় ছিলো। খন্দকার ফারুক আহমদ এর পিতা ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। বদলীর চাকুরী। তাঁর পদায়ন যখন বগুড়ায় তখন, ১৯৪০ সালে জন্মগ্রহণ করেন খন্দকার ফারুক আহমদ। বগুড়া জেলা স্কুল, রাঙ্গামাটি জেলা স্কুল, জগন্নাথ কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি, যেখানেই থেকেছেন সংগীত শিখার নেশা ছিলো তাঁর। ঢাকায় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তালিম নেন ওস্তাদ মিথুন দে’র কাছে। এ সময় কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে গান গাইতেন। গান শুনে তাঁকে প্রেরণা দিতেন প্রখ্যাত ও জনপ্রিয় কণ্ঠ শিল্পী আনোয়ার উদ্দীন খান। মুম্বাইয়ের এক অনুষ্ঠানে তার গান শুনে বিশেষ প্রশংসা করেন শচীন দেব বর্মণ। ১৯৬১ সালে ঢাকা রেডিওতে অডিশন দিয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি। ১৯৬৭ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত “চাওয়া পাওয়া” ছবিতে গান গেয়ে সবার দৃষ্টি কেড়ে নেন খন্দকার ফারুক আহমদ। “আমি নিজের মনে, নিজেই যেন গোপনে ধরা পড়েছি”, “কোথায় তোমায় যেন দেখেছি”, “বাসন্তী রং শাড়ি পরে”, “কাছে এসো, যদি বলো, তবে দূরেই কেন থাকো”, “তোমার এ উপহার আমি চিরদিন”, “নীল নীল আহা কত নীল”, “আমি কার জন্য পথ চেয়ে রবো”, “ঢাকা শহর আইসা আমার আশা পুরাইছে” এমনই সব জনপ্রিয় গানের শিল্পী তিনি। খন্দকার ফারুক আহমদ ২০০১ সালের ১১ জুলাই প্রয়াত হন। শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা এই গুনী শিল্পীর স্মৃতির প্রতি।
মুজতবা সউদ