গেল বছর অর্ষার সাথে প্রথম ‘সাহস’ নিয়ে কথা হয়। প্রচুর কথা। নেটওয়ার্কের সমস্যার জন্য বারবার কল ড্রপ হচ্ছিল। আমি / অর্ষা একে অপরকে কল ব্যাক করছিলাম। তখনই জানতে পারি ‘সাহস’ কেমন ছবি হতে যাচ্ছে। পরবর্তীতে পরিচালক সাজ্জাদ খানের সাথেও এ বিষয়ে আলাপ হয়। খুব করে চাচ্ছিলাম ‘আনসেন্সরড’ ছবিটি দেখতে। কারণ, সেন্সরবোর্ড ছবিটি নাকি কাটাছেঁড়া করে ফের জমা দিতে বলেছে। যখন ই-মেইল পেলাম, চরকিতে আনকাট ‘সাহস’ দেখা যাবে তখন বেশ আনন্দবোধ হচ্ছিল। তাই তড়িঘড়ি করে দেখে ফেললাম ‘সাহস’।
ছবিটি দেখার সময় কখনো মনে হয়নি এ দৃশ্যটি কেটে ফেলা দরকার। বরং সমাজের একটি চিত্র পর্দায় তুলে ধরেছেন সাজ্জাদ খান। এমন হয়। সুশিক্ষার অভাবে উচ্ছন্নে যাওয়া তরুণের সংখ্যা কম নয়। তারা বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। তাদের কাঁধে ভর করে ক্ষমতা প্রদর্শন করে তথাকথিত বড় ভাই, নেতারা। তাই, সিনেমার গল্প বাইরের কিছু নয়। আমাদেরই গল্প। সমাজের অন্ধকার দিক।
মোস্তাফিজুর নূর ইমরানের সাবলিল অভিনয় বরাবরই পছন্দের। এখানেও তিনি তাই করেছেন। তিনি আরো বেশি সুযোগ ডিজার্ভ করেন। কখনো খেটে খাওয়া যুবক, কখনো প্রেমিক, কখনো প্রতিবাদী স্বামী – মানিয়ে গেছেন সব লেয়ারেই।
অর্ষার অভিনয় বেশ ভালো লাগে। চোখ দিয়ে কথা বলেন তিনি। কাজল চোখের অর্ষা ভীষণ মায়াবী। নির্মাতাকে ধন্যবাদ, এমন একটি চরিত্রে তাকে কাস্ট করেছেন। অর্ষাও দেখিয়েছেন পরিমিত অভিনয় করে কীভাবে চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে হয়।
ছবিতে বাগেরহাটের স্থানীয় অভিনয়শিল্পীরা অভিনয় করেছেন। তাদের সাথে পরিচয় নেই। তারাও নিজেদের মতো করে মানিয়ে গেছেন। স্থানীয় ভাষার ব্যবহারে ছিলেন পারফেক্ট।
শেষ দিকে খায়রুল বাশারের আগমন ছিল দারুণ। তবে তার চরিত্রের ব্যাপ্তি আরেকটু বেশি হতে পারত।
ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ভালো লেগেছে। কালার গ্রেডিং সাদামাটা লেগেছে কোনো কোনো সময়। মারামারির দৃশ্যগুলো মনে করিয়ে দিয়েছে পুরনো দিনের নাটকের কথা। এখানে নির্মাতা আরেকটু সাহসী হতে পারতেন।
সবকিছু মিলিয়ে ‘সাহস’ উপভোগ করেছি। এমন ছবি আরও হোক। উঠে আসুক সমাজের নানা স্তরের গল্প। হোক সেটা সিনেমা কিম্বা ছোট পর্দা।
তারেক মুহাম্মদ