আওলাদ হোসেন’র স্মৃতির প্রতি ভালোবাসা

সেবারও বছর চক্রের নিয়মে পহেলা অক্টোবর এসেছিলো। পালিত হচ্ছিলো চ্যানেল আই এর জন্মদিন। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে সাধারণত এক চক্কর যাই। শ্রদ্ধার, সম্মানের, স্নেহের এবং বন্ধু অনেকের সঙ্গে দেখা হয়। সেবার যাওয়া হয়নি। একবার আওলাদ ফোন করেছিলো, ‘আসবেন না?’ একটা কাজে আঁটকে ছিলাম। বললাম যাওয়া মনে হয় হবে না। জানালো, তারও পুরানো ঢাকা বিষয়ক একটি সমিতির মিটিং আছে। তাই সেদিন আর দেখা হবে না, পরে দেখা আর কথা হবে। এরপর রাত ১২ টা পেরিয়ে ২ অক্টোবর শুরু হয়েছিলো। ঘুমিয়ে গেছিলাম। তখনো ফজরের আজান হয়নি, মোবাইল ফোন বেজে উঠলো, দেখলাম রহমান ভাই। তখনই বুকের ভেতরটা অজানা আশংকায় কেঁপে উঠলো। এ সময় রহমান ভাইয়ের জেগে থাকার কথা নয়। রিসিভ করতেই রহমান ভাই কান্না চাপা কণ্ঠে বললেন, “আওলাদ নাই”। প্রচন্ড এক মানষিক ধাক্কায় আর কিছুই যেন শুনতে পারছিলাম না। যতটা সম্ভব শুনে বললাম, “রহমান ভাই আমি আসছি”। তিনি বললেন, “বেরিও না। মিরপুর থেকে ঝিগাতলা এসে পাবেনা। লাশ ফ্রিজিং গাড়িতে তোলা হচ্ছে। আমি আছি এখানে। লাশ নিয়ে জাওয়া হবে পুরানো ঢাকায়। তুমি সকালেই এফডিসি চলে যাও। ১১ টা নাগাদ ওখানে আওলাদ কে নিয়ে আসবো ওখানে সবাই জানাজা’র আয়োজন করবে, তুমি থেকো ওদের সঙ্গে।” দেখা হলো আওলাদ হোসেনের সঙ্গে। কথা হলোনা, সকল কথার ঊর্ধ্বে চলে যাওয়া এই প্রিয়জনের সঙ্গে। হবেও না কোনদিন। আজ ২ অক্টোবর, তার মৃত্যু বার্ষিকী। আওলাদ কথা বলার ঊর্ধ্বে চলে গেলেও, যতদিন বেঁচে আছি আমাদের বলার আছে, চাওয়ার আছে মহান আল্লাহ’র কাছে। চলুন উনার কাছেই, উনার নাম গুলো ডেকে ডেকে প্রার্থনা করি।
“হে আল্লাহ, আপনি করুণাময়, দয়াময়, সদাশয়, ক্ষমাশীল। জেনে বা না জেনে আমাদের সুহৃদ, বন্ধু মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন যদি কোন অপরাধ করে থাকে আপনি ক্ষমা করুন। আপনি অদ্বিতীয় দাতা, শান্তিদাতা। আপনি তাঁর প্রতি শান্তি বর্ষণ করুন। আপনি গৌরব ও সম্মানের প্রভু, মহান, মহৎ, নিয়ন্ত্রণকারী, সম্মান দাতা। আপনি মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন কে বেহেশত এর সম্মানিত স্থানে রাখুন।”
মুজতবা সউদ