দেশের অন্যতম রকস্টার নগর বাউল জেমসের জন্মদিন আজ। জীবনের ৫৬ বছর পূর্ণ করে ৫৭ বছরে পা রাখলেন তিনি। জন্মদিনকে ঘিরে জেমসের ঘরে পারিবারিকভাবে একটা কেক কাটা হবে। সারাদিন বাসায় থাকবেন তিনি। জেমস নিজে থেকে কোনও আয়োজন না রাখলেও নানা আয়োজনের মাধ্যমে জেমসের জন্মদিন পালন করছে তার ভক্তরা। জেমস-এর মুখপাত্র রুবাইয়াৎ ঠাকুর রবিন জানান, প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন জেলার ভক্তরা জেমস ভাইয়ের জন্মদিনটি উদযাপন করে থাকেন। এবারও এরকম বেশকিছু উদ্যোগের কথা জেনেছি। বিভিন্ন জেলার ‘দুষ্টু ছেলের দল’ নামে জেমসের ভক্তরা সারা দিনব্যাপী বিভিন্ন আয়োজন রেখেছে। এর মধ্যে ঢাকা, খুলনা, যশোর, নরসিংদী, রংপুর, মেহেরপুর, কুড়িগ্রাম, ভোলা পটুয়াখালী, কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় জেমসের দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনায় মসজিদ-মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন মিলনমেলায় দোয়ার আয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি কেক কেটে সুবিধাবঞ্চিতদের সঙ্গে নিয়ে গান ও আড্ডার আয়োজন রেখেছে তারা। কিশোরগঞ্জসহ বেশকিছু জায়গায় বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করারও উদ্যোগ নিয়েছে জেমস ভক্তদের গ্রুপ ‘দুষ্টু ছেলের দল’। শুধু দেশেই নয় বিদেশের মাটিতেও থাকছে জেমসের জন্মদিনের আয়োজন। জেমসের জন্মদিনকে ঘিরে ভক্তদের আয়োজন রয়েছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, দুবাইতেও।
সঙ্গীতের নন্দিত তারকা জেমস ১৯৬৪ সালের নওগাঁয় জন্মগ্রহণ করেন। তার পারিবারিক নাম মাহফুজ আনাম। তবে তার কৈশোর কেটেছে চট্টগ্রামের আজিজ বোর্ডিং-এ। বন্ধুদের নিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ব্যান্ড ‘ফিলিংস’। ১৯৮৭ সালে ফিলিংস ব্যান্ডের সঙ্গে তার প্রথম অ্যালবাম ‘স্টেশন রোড’ প্রকাশ হয়। ১৯৮৮ সালে আসে তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘অনন্যা’। পরবর্তীতে ‘ফিলিংস’-এর নাম পরিবর্তন করে দেন ‘নগর বাউল’। জেমস-এর ব্যান্ড ও একক অ্যালবামের মধ্যে আরো রয়েছে- লেইস ফিতা লেইস, নগর বাউল, দুষ্টু ছেলের দল, পালাবে কোথায়, দুঃখিনী দুঃখ করো না, আমি তোমাদেরই লোক ও কাল যমুনা।
বাংলাদেশি সিনেমায় জেমসের গান বেশ জনপ্রিয়। দুইবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। শুধু দেশীয় প্লেব্যাক নয়, বলিউডেও রাজত্ব করেছেন এই রক তারকা। তার গাওয়া ‘ভিগি ভিগি’, ‘চাল চালে’, ‘আলবিদা’, ‘রিশতে’ এবং ‘বেবাসি’ গানগুলো এখনও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয়।
জেমসের গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘তারায় তারায়’, ‘লেইস ফিতা লেইস’, ‘সুলতানা বিবিয়ানা’, ‘সুস্মিতার সবুজ ওড়না’, ‘হতেও পারে এই দেখা শেষ দেখা’, ‘কবিতা তুমি স্বপ্নচারিণী’, ‘দুস্টু ছেলের দল’, ‘দিদিমনি’, ‘দুঃখিনী দুঃখ করোনা’, ‘তোর সব কিছুতে নয় ছয়’, ‘বাবা কত দিন দেখি না তোমায়’, ‘গুরু ঘর বানাইলা কী দিয়া’, ‘লিখতে পারি না কোনো গান’, ‘এক নদী যমুনা’ ইত্যাদি।
ব্যক্তিজীবনে জেমস দুই বিয়ে করেছেন। তার প্রথম স্ত্রী ছিলেন রথি। তিনি ছিলেন একজন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। ১৯৯১ সালে বিয়ের পর ২০০৩ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। রথির সঙ্গে বিচ্ছেদের আগেই ২০০২ সালে জেমস বিয়ে করেন বেনজির সাজ্জাদকে। জেমসের দুইটি কন্যা সন্তান (জান্নাত এবং জাহান) ও একটি পুত্র সন্তান (দানেশ) রয়েছে।
রোমান রায়