শাপলা মিডিয়ার ১০০ ছবির ঘোষণা

চলচ্চিত্রের দুর্দিনে শাপলার ১০০ সিনেমার ঘোষণা, চলতি মাসেই শুরু হচ্ছে ১০টির শুটিং
চেনা ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে ঢাকার সিনেমা। একের পর এক আসছে নতুন সিনেমার ঘোষণা। এরই মধ্যে বেশ কিছু সিনেমার নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় জিমিয়ে থাকা চলচ্চিত্র ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ নিয়ে ‘ঘুমিয়ে পড়া বিএফডিসি এবার জেগে উঠবে চলচ্চিত্রের সবার মুখে আবার হাসি ফুটবে’ এমন শ্লোগানে এক সঙ্গে ১০০ সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকাই সিনেমার দুর্দিনের বন্ধু প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়া ইন্টারন্যাশনাল। ১০০ জন নির্মাতা ১০০টি ছবি নির্মাণ করবেন। থাকবেন জনপ্রিয় তারকা থেকে শুরু করে এ প্রজন্মের শিল্পীরা। আওয়াজেই থেমে থাকবে না চলতি মাস থেকেই শুরু হচ্ছে এর নির্মাণ কাজ।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এফডিসিতে জমকালো মহরতের মাধ্যমে এ ছবিগুলো নির্মাণের ঘোষণা দেন শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার সেলিম খান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক। ১০০ ছবি ঘোষণার মাধ্যমে রেকর্ড গড়লেন শাপলা। পূর্বে যা ঘটেনি তা করলেন এ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। তবে এখনই সবগুলো ছবির নাম ও শিল্পী চূড়ান্ত হয়নি। নির্মাণের প্রস্তুতিকালে ছবির নাম ও শিল্পীর নাম জানান দিবেন পরিচালকরা। চলতি মাসে ৩০ জন, মার্চে ৩০ জন, এপ্রিলে ৪০ জন নির্মাতা ছবি নির্মাণ কাজ শুরু করবেন। প্রথমে লটে ১০ জন নির্মাতা এক সঙ্গে শুটিং শুরু করবেন। লটারীর মাধ্যমে কে কোন লটে নির্মাণ কাজ শুরু করবেন তা নির্বাচিত হয়েছে। ১০০ জন পরিচালকদের মধ্যে পর্যায়ক্রমে যারা শুটিংয়ে যাবেন তাদের নাম লট অনযায়ী প্রথম দশ জন নির্মাতা হলেন- শফিকুল ইসলাম খান, এম, ডি মোতালেব, জসিম উদ্দিন জাকির, মোস্তাফিজুর রহমান বাবু, জাফর আল মামুন, হোদায়েত উল্লাহ খান, রেজা হাসমত, মোঃ নাসির উদ্দিন, খন্দকার মোন্তাহিদুল আলম লিটন, জেসমিন আক্তার নদী। দ্বিতীয় লটের দশ জন হলেন- সেলিম আযম, সৈয়দ মাসুম, ডি, এইচ বাদল খান, আব্দুর রহিম বাবু, জুলহাস চৌধুরী পলাশ, মিজানুর রহমান লাবু, নজরুল ইসলাম বাবু, মির্জা সাখাওয়াত হোসেন, ওয়াজেদ আলী বাবলু, এখলাস আবেদীন। তৃতীয় লটে- মোখলেসুর রহমান গোলাপ, আলী রেজা রুহিন, মোঃ রুহুল আমিন, আলী আজাদ, আকাশ আচার্য্য, এম, এ আউয়াল, সুমন ধর, রাজু চৌধুরী, সত্য রঞ্জন রোমান্স। চতুর্থ লটে- ডি, এইচ নিশান, এম, এ মালেক বিশ্বাস, চন্দন চৌধুরী, শাহ আলম মন্ডল, মাসুমা তানি, তারেক সিকদার, নিরঞ্জন বিশ্বাস, শাহীন মাহমুদ, এ, কিউ খোকন, শেখ সুলতান। পঞ্চম লটে- মনির হোসেন মিঠু, সৈয়দ মুখলেসুর রহমান, নাসির উদ্দিন রিজভী, রহমান আলী খান, এম, এ রহিম, আবুল হোসেন খোকন, এফ, আই মানিক, জুয়েল ফার্রসি, দেবাশীষ বিশ্বাস।
ষষ্ঠ লটে- গাজী মাহবুব, রফিক সিকদার, রায়হান মুজিব, মনতাজুর রহমান আকবর, সরোয়ার হোসেন, সাইফ চন্দন, শামীমুল ইসলাম শামীম, পলাশ পারভেজ, ডা: বুলবুল বিশ্বাস, ওয়াহিদুর রহমান মিলু। সপ্তম লটে- জেমস্ কাজল, মো: আসলাম পারভেজ, রকিবুল আলম রকিব, মৃদুলি আহমেদ দিশারী, মীর আব্দুর রাজ্জাক, উত্তম আকাশ, আহম্মেদ আলী মন্ডল, বাবুল রেজা, রিয়াজুল রিজু, আব্দুল মান্নান। অষ্ঠম লটে- শাহ্ মো: সংগ্রাম, নূর মো: মনি, এস, এম বাবুল, এ, কে, এম, ফিরোজ বাবু, কালাম কায়সার, বীর মুক্তিযোদ্ধা এস, আর রেজা, ইদ্রিস হায়দার, মকবুল হোসেন, সাহেদুর রহমান সাজু। নবম লটে- আনোয়ার সিকদার, সৈয়দ শামসুল আলম, মো: আনোয়ার সিরাজী, আবু সাইদ খান, ইকবাল হোসেন হারুন, শেখ শামীম, মিজানুর রহমান শামীম, নুরন নাহাত, শফিক হাসান, এফ, জাহাঙ্গীর। দশম লটে- হানিফ রেজা মিলন, বাবু রাজ খান, কমল সরকার, এ, কে, রানা, বোরহান উদ্দিন রনি, জিল্লুর রহমান ময়না, এ, আর, মুকুল নেত্রোবাদী, মিজানুর রহমান মিজান, মনিরুল ইসলাম সোহেল, সায়মন তারিক, ফিরোজ খান প্রিন্স, এম, এ, আউয়াল প্রিন্টু।
এতে অভিনয় করবেন চিত্রনায়িকা কেয়া, আঁচল আঁখি, তানহা তাসনিয়া, মিষ্টি জান্নাত, বিপাশা কবির, আফ্রি, সহ আরও কয়েকজন। নায়কদের মধ্যে নিরব, ইমন, সাইফ খান, সুমিত সেনগুপ্ত, শিপন মিত্র, সাঞ্জু জন, জয় চৌধুরী, কায়েস আরজু ও আমান রেজা অভিনয় করবেন। এই ১০০ ছবির সমন্বয়ক হিসেবে যুক্ত আছেন পরিচালক শাহীন সুমন ও অপূর্ব রানা।
এ প্রসঙ্গে শাহীন সুমন বলেন, ‘এই ১০০ সিনেমা নির্মাণ করবেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির নির্মাতারা। আমরা মনেকরি, পরিচালক সমিতির সকল নির্মাতাই দক্ষ। তাই এগুলো নির্ধারণ করা হবে লটারির মাধ্যমে। এরমধ্যে ১৫টি সিনেমার গল্প, পরিচালক ও শিল্পী সব প্রস্তুত আছে। চলতি মাস থেকেই এগুলোর শুটিং শুরু হবে। টানা লট ধরে ১৫টি করে সিনেমার কাজ চলবে। শুটিং শেষে এগুলো সেন্সরে যাবে। ছাড়পত্র পাওয়ার পর প্রেক্ষাগৃহ, ইউটিউব ও টেলিভিশনে মুক্তি পাবে।’
অপূর্ব রানা বলেন, ‘অনেক সময় দেখি শুধু মহরতেই সব সীমাবদ্ধ, সিনেমার শুটিং আর হয় না। তবে এই সিনেমার শুটিং শেষ হবে। আমরা একসঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদের কাজ শুরু করেছি। একই সঙ্গে ২০টি ক্যামেরার কাজ করবে। এরই মধ্যে কক্সবাজারে চার মাসের জন্য শুটিংয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। একসঙ্গে এতগুলো সিনেমার কাজ করলে স্বাভাবিক কারণে শুটিংয়ের খরচ কম হবে।’
শাপলা মিডিয়ার এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন চলচিত্রের এই দুঃসময়ে এত বড় একটা উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। আশা নয় বিশ্বাস তাদের উদ্যোগ সফল হবে এবং অচিরেই ঘুমিয়ে থাকা বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি ফের ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে। চলচ্চিত্র ফিরে পাবে তার হারানো ঐতিহ্য। চলতি মাসের ২২ তারিখ থেকে প্রথম লটে ১০টি সিনেমার দৃশ্য ধারণ শুরু হবে। মার্চের ১২ তারিখ দ্বিতীয় ধাপের সিনেমার শুটিং শুরু হবে। এভাবে ধারাবাহিক ভাবে ছবিগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
রোমান রায়