বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর ঘটনায় উঠে এসেছে মাদক চক্রের যোগ থাকার সম্ভবনা। বেশকিছু হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকে মনে করা হচ্ছে, মাদক চক্রের সঙ্গে যোগ রয়েছে মূল অভিযুক্ত রিয়া চক্রবর্তীর। এদিকে বি-টাউনে মাদকচক্র নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন স্পষ্টভাষী কঙ্গনা রানৌত।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে কঙ্গনা দাবি করেন, ”আমি যখন মানালি ছেড়েছিলাম তখন আমার ১৬ বছর বয়স। চন্ডীগড়ে একটি প্রতিযোগিতায় জিতে এক সংস্থার মাধ্যমে মুম্বই এসেছিলাম। কেরিয়ারের শুরুর দিকে হস্টেলে থাকতাম, তারপর এক আন্টির সঙ্গে থাকা শুরু করি। সেসময় এক চরিত্র অভিনেতা আমার সঙ্গে বন্ধুত্ব করে এবং বলিউডে কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। আমি যে মহিলার সঙ্গে থাকতাম, তার প্রতিও মুগ্ধ ছিলেন ওই অভিনেতা। তারপর আমরা তিনজনে একসঙ্গেই থাকা শুরু করি। ধীরে ধীরে তিনি নিজেই স্বনিযুক্ত পরামর্শদাতা হয়ে উঠলেন। পরে ওই চরিত্র অভিনেতা আন্টির সঙ্গে ঝগড়া করে তাঁকে বের করে দেন। আমার জিনিসপত্র সহ একটা ঘরে রেখে তালাবন্ধ করে রাখেন। আমি যাই করতাম, ওনাকে বলে করতে হত, আমি একপ্রকার গৃহবন্দী হয়ে গিয়েছিলাম।”
এখানেই শেষ নয়, নিজের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা জানিয়ে কঙ্গনা বলেন, ”ওই ব্যক্তি আমায় বিভিন্ন পার্টিতে নিয়ে যেতেন। একদিন আমি নেশাগ্রস্ত বোধ করলাম, ওনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছিলাম। পরে বুঝলাম, এটা স্বেচ্ছায় হয়নি, আমার পানীয়র মধ্যে কিছু মেশানো হয়েছিল। এরপর থেকে ওই অভিনেতা নিজেকে আমার স্বামীর মতো আচরণ করা শুরু করলেন। কিছু বললেই মারধর করতেন। প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছিলাম, আপনি আমার বয়ফ্রেন্ড নন, বলতেই আমায় চটি দিয়ে মারলেন।” কঙ্গনার কথায়, ”ওই ব্যক্তি আমাকে দুবাইয়ের বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে আলাপ করালেন। আমাকে বললেন প্রবীণদের মাঝে যেন বসি, আর তিনি তখন ওই জায়গাটি ছেড়ে চলে যাবেন। আমাকে তাঁদের নম্বর নিতেও বলেছিলেন। আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম এটা ভেবে যে, আমায় দুবাইতে পাচার করে দেওয়া হবে না তো?”
এখানেই শেষ নয়, কঙ্গনা জানান, ”আমি যখন সিনেমায় সুযোগ পাই ওই ব্যক্তি রেগে গিয়েছিলেন। উনি মত্ত অবস্থায় আমায় বললেন, তিনি ভাবেননি আমি সিনেমায় সুযোগ পাব। তারপর আমাকে ইনজেকশন দিয়ে বিদ্রুপ করে বললেন আমি আর শ্যুটিংয়ে যেতে পারবো না। আমি পুরো বিষয়টা অনুরাগ বসুকে জানিয়েছিলাম (কঙ্গনার প্রথম ছবি গ্যাংস্টারের পরিচালক) তিনিই আমায় আশ্রয় দিয়েছিলেন। অনুরাগ বসু আমায় রাতে তাঁর অফিসে থাকার ব্যবস্থা করে দেন।”
কঙ্গনা টুইটেও লেখেন, তাঁর তখন বয়স কম ছিল, সেসময় তাঁর মেন্টরই নির্যাতনকারী হয়ে যান। বিভিন্ন পার্টিতে নিয়ে গিয়ে মাদক মিশিয়ে দিতেন। তখনই তিনি বি-টাউনের মাদকের দুনিয়ার কথা জানতে পেরেছিলেন।
এদিকে সুশান্ত মামলায় নারকোটিক্স ব্যুরো তদন্ত করছে জানতে পেরে কঙ্গনা নিজেই ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, তিনি এই ক্ষেত্রে তদন্তকারীদের সাহায্য করতে পারেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে সরকারি নিরাপত্তা লাগবে, তা নাহলে কেরিয়ারের সঙ্গে তাঁর জীবনও শেষ হয়ে যেতে পারে। কঙ্গনার কথায় আমার মনে হয়, সুশান্তও বি-টাউনের মাদক সংক্রান্ত নোংরা রূপটা জেনে গিয়েছিলেন, হয়ত তাই তাঁকে মেরে ফেলা হয়েছে।
রোমান রায়