মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে করোনা রোগীদের সেবায় নির্মাতা শেখ রুনা

বিশ্বের চলমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে বাংলাদেশও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। কিন্তু বিপর্যস্ত এই অবস্থায় বিভিন্ন পেশার মানুষ করোনায় আক্রান্ত রোগীদের পাশে এসেছেন সহযোগিতার হাত নিয়ে। যেখানে কারো করোনা হলে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সাধারণত নাম গোপন করে রাখার চেষ্টা করা হয়, আবার করোনা রোগী থেকে সবাই যেখানে নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করা হয় সেখানে তরুণ নাট্যনির্মাতা, প্রযোজক শেখ রুনা নিজের ইচ্ছেতে মৃত্যুকে পরোয়া না করে করোনা রোগীদের সেবা দানে একজন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে এগিয়ে এলেন। রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত রিজেন্ট হাসপাতালে একজন সেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছেন বিগত বেশ কয়েকদিন যাবত যা এই মুহুর্তে ভীষণ চ্যালেঞ্জিংই বলা চলে। ২০১৭ সালে এই রিজেন্ট হাসপাতালই সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্বকভাবে আঘাত পাওয়া শেখ রুনার পাশে দাঁড়িয়েছিলো। সেই সময় বিরাট অঙ্কের টাকা মওকুফ করে দিয়েছিলো হাসপাতালটি। হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো: শাহেদের উদারতার কথা রুনা আজীবন মনে রাখবেন। করোনা রোগীদের পাশে দাঁড়ানো
প্রসঙ্গে শেখ রুনা বলেন, ‘ সত্যি বলতে কী ২০১৭ সালে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আমার সঙ্গে থাকা বেশিরভাগ মানুষই মারা গিয়েছিলেন। আরেকজন’সহ আমি বেঁচে যাই। নতুন করে জীবন ফিরে পাওয়াটাকে মহান আল্লাহর অশেষ রহমত হিসেবেই দেখি আমি। তাই নিজের জীবনটাকে মানুষের জন্য নিবেদিত করতে চেয়েছি সবসময়।সেই সুযোগ যেহেতু পেলাম আমি, তাই করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সেবাদানে পাশে থাকতে রিজেন্ট হসপিটালের চেয়ারম্যান শ্রদ্ধেয় শাহেদ ভাইয়ের অনুপ্রেরণায় এগিয়ে এলাম। আমার বাবা মা খুউব দু:শ্চিন্তা করছেন। কিন্তু তাদের আমি বলেছি যে মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক বাবা মায়ের সন্তানই যুদ্ধে গিয়ে শহীদ হয়েছেন, দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন, আবার কেউ কেউ বাবা মায়ের বুকে ফিরে এসেছেন। আমিও না হয় করোনার মতো মহামারীতে মানুষের জন্য নিজেকে নিবেদিত করলাম। যদি বেঁচে যাই ইনশাআল্লাহ সবার সঙ্গে দেখা হবে। আর যদি ফিরে না আসি তবে না হয় মানুষের জন্য নিজেকে শহীদী মৃত্যুতে নিবেদিত করলাম। সারাদেশব্যাপী করোনা মহামারী আকার ধারণ করেছে তাতে মানুষের জন্য সম্মুখে এসে কাজ করছি। মানুষের জন্যই নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে যেতে চাই। এমন দুর্যোগের মুহূর্তে ঘরে বসে সুন্দর আগামীর জন্য অপেক্ষা করার মতো মানুষ আমি নই। তাই চ্যালেঞ্জটা ভালোবেসেই গ্রহন করেছি। ’
শেখ রুনা আরও জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার নিরলস পরিশ্রমে এবং করোনা রোগীদের সুস্থ করে তোলার ব্যাপারে তার আন্তরিকতায় ভীষণ মুগ্ধ। শেখ রুনার সুপারভাইজিং-এ হাসপাতালের পরিবেশই বদলে গেছে বলে জানান শেখ রুনা। জানা যায় রিজেন্ট হসপিটাল থেকে করোনা আক্রান্ত বেশ কয়েকজন রোগী সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে গেছেন। শেখ রুনার গ্রামের বাড়ি খুলনায়। দুটি দীর্ঘ ধারাবাহিক’সহ তিনি বিশেরও অধিক নাটক/টেলিফিল্ম নির্মাণ করেছেন।
রোমান রায়