বিশেষ ব্যবস্থায় নাটক নির্মাণের কথা ভাবছে টেলিভিশনের চার সংগঠন

করোনার এই দুর্যোগে অর্থনৈতিকভাবে কাটিয়ে উঠতে টেলিভিশনের চারটি সংগঠন বিশেষ ব্যবস্থায় নাটক নির্মাণের কথা ভাবছে। সংগঠনগুলোর মধ্যে আছে—টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, অভিনয় শিল্পী সংঘ, ডিরেক্টরস গিল্ড ও নাট্যকার সংঘ। অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম করোনার এই সময়ে ফান্ড তৈরির জন্য এমন প্রস্তাব রেখেছেন অন্য সংগঠনের কাছে। এতে অন্যরাও একমত পোষণ করেছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আরও আলোচনার দরকার বলে মনে করে তারা।
শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক নাসিম বলেন, ‘নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে, ঘরে বসে কিংবা প্যানেলে বসেই হোক—আমরা যদি ২০০ নির্মাতাকে নাটক তৈরির দায়িত্ব দিই, সেখান থেকে নির্মাণের টাকার একটি অংশ আমাদের আন্তঃসংগঠনের তহবিলে দেওয়া হবে। নির্মাতা, শিল্পী-কলাকুশলীদের অনেক পাওনা টাকা বকেয়া আছে। সেগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া দরকার। আরেকটি বিষয় আমরা ভাবছি, যেসব কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান আমাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে, তাদের কাছে আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব দেওয়া। এতে করে হয়তো অসচ্ছল শিল্পীদের কিছুটা সাহায্য করা সম্ভব। কারণ আমরা কেউ-ই জানি না এই মহামারি কতদিন থাকবে।’
এমন প্রস্তাবনায় প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও অভিনেতা ইরেশ যাকের বলেন, ‘এটা করোনাকালীন প্রজেক্ট ধরা যেতে পারে। ধরুন, ১০০ নাটকের টাকার একটা অংশ এলো। এতে করে কিছুটা সাপোর্ট হয়তো অসচ্ছল শিল্পীরা পাবেন। এটা খুবই শক্তিশালী উদ্যোগ।’
এর সঙ্গে নীতিগতভাবে একমত ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাহ্‌উদ্দীন লাভলু। তবে তিনি মনে করেন, সঠিক সিদ্ধান্ত না হলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে। লাভলু বলেন, ‘সত্যি বলতে, ইতোমধ্যে আমাদের সংগঠনের ফান্ড শেষ হয়ে গেছে। জরুরি ফান্ড তৈরি করা দরকার। আমরাও নানা কিছু ভাবছি। আর শুটিং করার প্রস্তাবটি আন্তঃসাংগঠনিকভাবে গ্রহণ করতে হবে। কারা নির্মাণ করবেন, কবে থেকে নির্মাণ করবেন- সেটাও সুনির্দিষ্ট হতে হবে। যদি লকডাউন ৫ মে তারিখের আগে কেউ শুটিং করতে চান, বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে। এগুলো বিষয়ে দিকনির্দেশনা দরকার।’
নাটক নির্মাণের পাশাপাশি পাওনা টাকা তোলার বিষয়ে জোর দিতে চান নাট্যকার সংঘের সভাপতি মাসুম রেজা। ‘এভাবে নাটক নির্মাণ খুব সন্দর পরিকল্পনা। এটা আমরা অবশ্যই করব। এছাড়া টাকা কালেকশনের বিষয়ে আমাদের জরুরি ভিত্তিতে বসা দরকার’—বলেন তিনি।
জানা যায়, টিভি চ্যানেল, প্রযোজক, পরিচালক, শিল্পী ও কলাকুশলীরা প্রায় প্রত্যেকেরই কিছু টাকা পাওয়া আছে। আগামী মাসের মধ্যে এগুলো তুলে দিলে অসচ্ছল শিল্পীদের কাজে লাগবে বলে মনে করে সংগঠনগুলো।
এদিকে পুরো বিষয়টি নিয়ে সংগঠনগুলোর অভিভাবক ও নাট্যজন মামুনুর রশীদ বলেন, ‘এগুলো প্রাথমিক ভাবনা। আমাদের অনেক আলোচনা করতে হবে। যেন সংগঠনের সবাই বিষয়গুলো জানে। নীতিনির্ধারণও করতে হবে।’
সংগঠনগুলো থেকে জানা যায়, এখনও বিষয়টি পরিকল্পনার পর্যায়ে রয়েছে। যদি লকডাউন শিথিল হয় তাহলে ২০০ জন নির্মাতাকে এ দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। নাটকগুলো শুধু করোনা ফান্ডের জন্যই তৈরি হবে।
রোমান রায়