কর্ণিয়ার নতুন দুই প্রজেক্ট

এ সময়ের ব্যস্ত সংগীতশিল্পী জাকিয়া সুলতানা কর্ণিয়া। শীতকালে স্টেজ শো নিয়েই সবচেয়ে ব্যস্ত থাকেন শিল্পীরা। কর্ণিয়াও ব্যতিক্রম নন। বরং স্টেজে তার ব্যস্ততা একটু বেশিই। কারণ স্টেজে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য বেশ সুনাম রয়েছে তার। সম্প্রতি তিনি শো করেছেন যশোর ক্যান্টনমেন্টে। সেনাবাহিনীর আমন্ত্রণে রাষ্ট্রপতি সেখানে দুদিনের সফর করেছেন। এ উপলক্ষেই আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। কর্ণিয়া ছাড়াও সেখানে আরও গেয়েছেন ইমরান, লিজা, মেহরাবের মতো জনপ্রিয় শিল্পীরা। এক অনুষ্ঠানে এত সহকর্মীকে কাছে পেয়ে সময় কিভাবে কাটছে জানতে চাইলে কর্ণিয়া বলেন, ‘আসলে এক সঙ্গে থাকার সুযোগ খুব একটা পাওয়া যায় না। যখন যার স্টেজে ওঠার সময় থাকে, তখন সে অনুষ্ঠানে এসে পৌঁছায়। তাই সময়টা সেভাবে গল্প-আড্ডায় জমে ওঠে না।’
কর্ণিয়া বলেন, ‘স্টেজ শোই তো এখন একটি শিল্পীর আসল ব্যস্ততার জায়গা। স্টেজ শো না থাকলে বেশির ভাগ শিল্পী টিকেই থাকতে পারতেন না। আমি বরাবরই স্টেজ শোর শিল্পী। রেকর্ডিংয়ের চেয়ে স্টেজেই বেশি ব্যস্ত থাকি। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই আমার স্টেজ পারফরম্যান্স দর্শক খুব পছন্দ করেছে। তাদের আগ্রহের জন্যই স্টেজে বেশি সময় দিয়ে থাকি।’ স্টেজে কর্ণিয়ার সঙ্গে যারা বাদ্যযন্ত্র বাজান, তাদের নিয়েই তিনি গড়ে তুলেছেন ‘কর্ণিয়াস গ্যাং’। এই গ্যাং এবার নতুন একটি প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। দেশের দুটি ফোক গান ও ভারতের জনপ্রিয় কিছু বাংলা গানের ম্যাশআপ নতুন সংগীতায়োজনে কাভার করেছেন তারা। ফোক গান দুটি হলো– লালন সাঁইয়ের ‘মিলন হবে কতো দিনে’ ও ফোক গানের কিংবদন্তি শিল্পী কাঙালিনী সুফিয়ার ‘বুড়ি হইলাম তোর কারণে’। শিগগিরই এ গানগুলো কর্ণিয়ার অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পাবে।
শুধু পুরনো গান নয়, নতুন গান নিয়েও নিজের ইউটিউব চ্যানেলে হাজির হবেন এই গ্ল্যামারাস গায়িকা। বেশ আগে শাহান কবন্ধ’র লেখা ও পার্থ মজুমদারের সুর-সংগীতে ‘স্বপ্নপূরে’ শিরোনামের একটি গান রেকর্ড করেছিলেন কর্ণিয়া। তখন অবশ্য এটা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু গানটি রেকর্ডের সংশ্লিষ্ট সবার খুব ভালো লেগে যায়। এ জন্য শিগগিরই এর মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করা হবে। পরে তা কর্ণিয়ার ইউটিউব চ্যানেলে আসবে।
কর্ণিয়া কথা বলেছেন এ সময়ের সংগীতাঙ্গনের হালচাল নিয়েও। তার ভাষ্য, ‘কয়েক বছর আগেও সংগীতাঙ্গনের অবস্থা বেশ ভালো ছিল। ক্যাসেট, সিডির যুগের কথা বলছি না। ইউটিউবের সময়কার কথাই বলছি। অনেক বড় বাজেটের মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করত অডিও কোম্পানিগুলো। এখন বড় বাজেটের ভিডিও হয় না বললেই চলে। প্রত্যেক শিল্পী নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল খুলেছে। সেটি টিকিয়ে রাখতেই অল্প পরিসরে কাজ করছে সবাই। বেশির ভাগ ড়্গেেত্র জনপ্রিয় গানের কাভারই হচ্ছে। সবাই এত ইউটিউকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে যে, এর বাইরে সংগীতের যে বাজার রয়েছে, তা প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।’
চলচ্চিত্রের গানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখন সিনেমা খুব কম নির্মাণ হয়। আর যা হচ্ছে, তাতে দেশের অল্পকিছু শিল্পীই কাজ করছে। তাদের বাইরে কোনো শিল্পীকে কেন পরিচালকরা সুযোগ দিচ্ছেন না, তা আমি জানি না। আমি সেই দলের মধ্যে নই। এ জন্য অনেক দিন হলো চলচ্চিত্রে গান করা হয়নি।’
রোমান রায়