২৭ নভেম্বর বিকেলে আমার জন্ম। দিনটা ছিল বুধবার। সালটা বলতে চাচ্ছি না। আমরা ছয় ভাই-বোন, সবার ছোট আমি। আমার যখন জন্ম, বড় ভাই তখন ডাক্তারি পাস করে ফেলেছেন। গর্ভবতী অবস্থায় ভীষণ লজ্জার মধ্যে থাকতেন মা, পারতপক্ষে বড় ভাইয়ের সামনে যেতেন না। এগুলো বড় হয়ে শুনেছি। এতটাই সাদামাটাভাবে আশুলিয়ার বাড়িতে আমার জন্ম, কেউ নাকি টেরই পায়নি। ওজনেও খুব ছোট হয়েছিলাম। ছোটবেলা কেটেছে আশুলিয়ায়। একটা হিন্দু জমিদারবাড়ি পরে আমাদের বাড়ি হয়েছে। পুকুর ঘাট ছিল, সেটা এখনো আছে। ওই পুকুরে সাঁতরানো, গাছে ওঠা—কত দুরন্তপনাই না ছিল আমার মধ্যে। এসএসসির পর ঢাকায় আসি।
আমার বড় ভাই মায়ের সবচেয়ে আদরের। বড় ভাই ডাক্তার আরেক ভাই ইঞ্জিনিয়ার। মা-বাবা চেয়েছিলেন আমিও সে রকম কিছু একটা হই, পারলাম না। সবার ছোট হওয়ায় ভাই-বোনদের আদর পেয়েছি অনেক বেশি। বিশেষ করে আমার বড় বোন জহুরা আক্তার নিলু, উনি আমাকে মায়ের স্নেহ দিয়ে বড় করেছেন। বড় হওয়ার সময়টায় তাঁর কাছেই বেশি থেকেছি। আমার জন্মের সময় মা-বাবার বয়স হয়ে গিয়েছিল। বাবা মারা গেছেন তাও ১৩ বছর হলো। ঠিকাদারি ব্যবসা করতেন বাবা। সচ্ছল পরিবার ছিল, সংসারে টানাপড়েন কখনোই দেখিনি। আবার যে অঢেল ধন-সম্পদ ছিল, তাও না। আমি বড় হতে হতেই বড় ভাই-বোনদের প্রায় সবাই প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। চুমকি নামটি রেখেছিলেন আমার চাচাতো ভাই। আব্বুরা তিন ভাই একসঙ্গে থাকতেন, যৌথ পরিবার। ফারজানা নামটা রেখেছিলেন আমার খালাম্মা।
আলমগীর কবির