ক্যাসিনো-কাণ্ডে টালমাটাল মোহামেডান ক্লাবের ফুটবলররা অবশেষে দলবদল সেরেছে। এই দলবদলে বড় ভূমিকা ছিল সাবেক ফুটবলারদের।
গলায় ফুলের মালা। গায়ে সত্তর দশকের ঐতিহ্যবাহী জার্সি। ফুল দিয়ে সাজানো ঘোড়ার গাড়িতে রুম্মান বিন ওয়ালি সাব্বির, কায়সার হামিদরাসহ মোহামেডানের সাবেক ফুটবলাররা বাফুফে ভবনে এসে আবারও যেন পুরোনো দিনে ফিরে গিয়েছিলেন। উপলক্ষ মোহামেডানের আগামী মৌসুমের দলবদল।
ফুটবলারদের দলবদল তো নয়, এ যেন সাবেকদের মিলনমেলা। কে ছিলেন না এই মিলনমেলায়, মতিঝিলপাড়া মুখর হয়ে উঠেছিল উঠেছিল বশির আহমেদ, গোলাম সারোয়ার টিপু, জাকারিয়া পিন্টু, বাদল রায়, মোহাম্মদ মালা, হাসানুজ্জামান বাবলু, ইমতিয়াজ সুলতান জনি, কায়সার হামিদ, আয়াজ আহমেদ, স্বপন দাশ, রিয়াজ উদ্দিন, রুম্মান বিন ওয়ালি সাব্বির, ইমতিয়াজ আহমেদ নকীবদের জমজমাট আড্ডায়।
ক্যাসিনো-কাণ্ডে টালমাটাল মোহামেডান। ক্লাবটির ডিরেক্টর ইন চার্জ লোকমান হোসেন ভূঁইয়া র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর বর্তমানে হাজতে আছেন। মোহামেডানের এমন ক্রান্তিলগ্নে দল গড়ার আসল ভূমিকা নিয়েছেন সাবেকেরা।
নতুন প্রজন্মের ফুটবলারদের অনুপ্রেরণা দিতেই এমন আয়োজন বলে জানালেন সাবেক ফুটবলার ইমতিয়াজ সুলতান জনি, ‘মোহামেডান ক্রীড়াঙ্গনের বড় একটা ব্যানার। মোহামেডান থেকে অনেক বড় বড় খেলোয়াড়ের জন্ম হয়েছে। আমরা চাই আবারও এভাবে দেশে বড় ফুটবলার তৈরি করুক মোহামেডান। পুরোনোরা সবাই একত্রিত হয়েছি নতুন প্রজন্মের এই ছেলেদের অনুপ্রেরণা দিতে। সবার মধ্যে উদ্যম ফিরিয়ে আনতে। এক দশক আমাদের ক্লাবে আসতে দেওয়া হয়নি। একটা সংকটময় সময় পার করেছে ক্লাবটি। আমরা আবারও পুরোনো মোহামেডানকে দেখতে চাই।’
প্রায় ছয় বছর পর প্রিয় ক্লাবে পা রাখেন সাবেক ফুটবলার গোলাম সারোয়ার টিপু। দুঃসময় পেছনে ফেলে আবারও মোহামেডানকে পুরোনো চেহারায় দেখতে চান তিনি, ‘ক্লাবটি রাহুমুক্ত হয়েছে এতেই খুশি আমি। ক্লাবটি যে দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে এসেছে এটাই এখন আমাদের কাছে বড় ব্যাপার। যারা এত দিন ক্লাবে যেত না তারা নিয়মিত যাচ্ছে। আমি ক্লাবে গিয়ে যে আনন্দ পেয়েছি সেটা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। আগে ফুটবলারদের মধ্যে কোনো সেতুবন্ধন ছিল না। এখন সেই বন্ধনটা ফিরে আসবে বলে আমি আশাবাদী।’
এবারের মোহামেডান দলটা গড়া হয়েছে তারুণ্য নির্ভর করে। পুরোনো ডেরায় রয়ে গেছেন সাঈদ হাসান কানন, গোলরক্ষক আহসান হাবিব বিপু, ডিফেন্ডার আবিদ হোসেন, মিডফিল্ডার শ্যামল ব্যাপারী, হাবিবুর রহমান সোহাগ, আমির হাকিম বাপ্পী, মোহাম্মদ মিঠু, অনিক ঘোষ, ইউসুফ সিফাত, মালির ফরোয়ার্ড সোলেমান দিয়াবাতে এবং জাপানের মিডফিল্ডার নাগাতা।
এ ছাড়া নতুন যোগ দিয়েছেন আরামবাগের গোলরক্ষক মাজহারুল ইসলাম হিমেল, বসুন্ধরা কিংসের ডিফেন্ডার সোহানুর রহমান, নোফেলের ডিফেন্ডার ফরহাদ মনা, শেখ রাসেলের ফরোয়ার্ড আমিনুর রহমান সজীব, চট্টগ্রাম আবাহনীর মিডফিল্ডার শাহেদ হোসেন, আরামবাগের ডিফেন্ডার আতিকুজ্জামান, সেনাবাহিনীর ডিফেন্ডার হুমায়ুন কবির, গোলরক্ষক জসিম উদ্দিন, শেখ রাসেলের মিডফিল্ডার রুম্মান হোসেন, নোফেলের ডিফেন্ডার মাসুদ রানা মৃধা, কামরুল ইসলাম, সকার ক্লাবের ডিফেন্ডার ইমন খান, মুক্তিযোদ্ধার মিডফিল্ডার রাকিব খান, সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের ওসাই মং মারমা, চট্টগ্রাম আবাহনীর মিডফিল্ডার অনিক হোসেন, নোফেলের ডিফেন্ডার সাদেকুজ্জামান ফাহিম, শেখ রাসেলের গোলরক্ষক মোহাম্মদ সুজন, এদের নিয়ে মোহামেডান কি পারবে পুরোনো ঐতিহ্যটা ফিরিয়ে আনতে?
আলমগীর কবির