স্মরণ: নাট্যকার, পরিচালক ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব আব্দুল্লাহ আল মামুন

“ইডিয়ট”। ভীষণ আশ্চর্য হয়েছিলাম, বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত এই নাটকটি দেখে। কারণ, তখন আমি ফিল্ম সোসাইটি আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে গেছি। বিভিন্ন চলচ্চিত্রের তীব্র সমালোচনা করতে ভীষণ উৎসাহ বোধ করি। এই নাটকটি দেখার পর আমার মনে হোল, এটা নাটক নয়, এটা একটা চলচ্চিত্র। তখন থেকেই, আমি আব্দুল্লাহ আল মামুনের গুনমুগ্ধ। এর কিছুদিন পরেই বন্ধু লোদী আর বন্ধু স্বপন একটি প্রস্তাব দিলো, টেলিভিশনে আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের সঙ্গে কাজ করার। উপমহাদেশের প্রথম বিনোদন মুলক ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান “সপ্তবর্না” তখন তুমুল জনপ্রিয়। ওটা শেষ পর্যায়ে। এরপর, সায়ীদ স্যার শুরু করবেন “চতুরঙ্গ”। রাজী হয়ে গেলাম। শুরু হোল স্যারের সঙ্গে অনুষ্ঠান সহকারী হিসেবে, বাংলাদেশ টেলিভিশনে আমার কাজ করা। নিয়মিত যাতায়াত। তখনি পরিচয় হোল আব্দুল্লাহ আল মামুন, আমার মামুন ভাইয়ের সঙ্গে। মৃদু ভাষী, সজ্জন, অমায়িক এই মানুষটি খুব সহজেই যেন আমাদের মত তরুণদের (সেই সময়ে) আপন করে নিতেন, বন্ধুর মত মিশতেন। তাঁর অগনিত নাটক, ধারাবাহিক (সংশপ্তক সহ), মঞ্চ নাটক এবং চলচ্চিত্র (সারেং বউ, এখনই সময়, দুই জীবন ইত্যাদি) নিয়ে এই সল্প পরিসরে আলোচনা করা সম্ভব নয়। চলচ্চিত্রের মুক্ত আলোচনা করতাম আমরা।তাঁর ছবির মুক্ত আলোচনায় তিনি সাগ্রহে উপস্থিত হতেন। ছাত্র ছাত্রীদের নানান প্রশ্ন কিংবা সমালোচনার উত্তর দিতেন হাসিমুখে। সেই সব উত্তরেও ফুটে উঠতো অসম্ভব ধী শক্তি সম্পন্ন এই মানুষটির সৃষ্টিশীলতার কথা। বিভিন্ন গুনী মানুষ নানান সময়ে বলেছেন তাঁর সম্পর্কে। আজ আমার কিছু বলার নেই। ১৯৪২ সালের ১৩ জুলাই জামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন আবদুল্লাহ আল মামুন। প্রার্থনা করি মহান আল্লাহ যেন মামুন ভাইয়ের সকল গুনাহ মাফ করেন এবং তাঁকে বেহেশত নসীব করেন।

মুজতবা সউদ